খাগড়াছড়িতে অপহৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৫শিক্ষার্থীসহ ছয় জনকে উদ্বারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিজিবি ও পুলিশের একাধিক টিমের অভিযান চলছে। অভিযানের অংশ হিসেবে কখনো কখনো বøক রেইড করা হচ্ছে। অপহরণকারীরা বার বার স্থান পরিবর্তন করার কারণে উদ্বার অভিযান বিলম্ব হচ্ছে দাবী নিরাপত্তা বাহিনীর। এদিকে অপহৃতরা চার দিনেও উদ্বার না হওয়ায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বাড়ছে পরিবারে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েল জানান, অপহৃতদের উদ্বারে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বুধবার থেকেই অভিযান চলছে। অভিযানে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। সে সাথে বিভিন্ন সড়কে নিরাপত্ত জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন,অভিযানের সময় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করছে না। ছবি দেখিয়ে অপহৃত ও অপহরণকারীদের চিনে কিনা তা জানতে চাচ্ছে।
বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো: আমান হাসান বলেন,আমাদের প্রথম টার্গেট হচ্ছে, অপহৃত চবি’র ৫ শিক্ষার্থীকে উদ্বার করা।
প্রসঙ্গত,বৈসাবি উৎসব শেষে ফেরার পথে গত বুধবার(১৬ এপ্রিল) সকালে খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের গিরিফুল এলাকা থেকে সন্তু লারমা সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদস্য চবি শাখার রিশান চাকমাসহ ৫ শিক্ষার্থীসহ ৬ ছয় জনকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয়।রিশান চাকমা চবি’র আন্তজাতিক সর্ম্পক বিভাগের শিক্ষার্থী। অপর অপহৃতরা হচ্ছে, চবির চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা,নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা ,প্রাণী বিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো ও চারুকলা বিভিগের অলড্রিন ত্রিপুরা। এরা প্রত্যেককে বিশ^বিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এদিকে অপহৃত চবি’র নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমার মা ভারতী চাকমা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সন্তানকে ফেরত চেয়ে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছে।
ভারতী চাকমা লিখেছেন-“প্লিজ কারো মায়ের বুক খালি না করে দোষ থাকলে,উপযুক্ত শাস্তি দিন তবও সন্তান হারানোর বেদনা যেন কারো বুকে না লাগে। আমি হাত জোর করছি,ফিরিয়ে দিন আমাদের সন্তানদের।
সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি’র) সভাপতি নিপুন ত্রিপুরা এক বিবৃতিতে রিশান চাকমাকে তাদের ছাত্র সংগঠনের চবি শাখার সদস্য দাবী করে বলেন, তারা গতকাল(মঙ্গলবার) রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে সৈবাবি উৎসব শেষ করে খাগড়াছড়ি হয়ে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে ফেরার কথা ছিল। কিন্ত বাসে টিকেট না পাওয়ায় মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার কুকিছড়া এলাকায় মৈত্রীময় চাকমার এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাতযাপন করেছিল। সকাল ৭ টার গাড়িতে তাদের চট্টগ্রামে ফেরার কথা। কিন্ত গিরিফুল এলাকা থেকে তাদেরকে জোরপূর্বক তুলে নেয়া হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের বহনকারী টমটম চালককেও অপহরণ করা হয়। এই ঘটনার জন্য তিনি ইউপিডিএফ(প্রসীত) গ্রæডকে দায়ী করেন তিনি। তবে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইউপিডিএফের প্রসীত গ্রæপের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা।