আজ (১৪এপ্রিল) সোমবার মধ্যরাত থেকে বঙ্গোপসাগরে শুরু হচ্ছে ৫৮ দিনের মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা। এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত। জেলেদের দাবির মুখে মৎস্য অধিদপ্তর ভারত সাগরের সাথে মিল রেখে
এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। জেলেরা ইতিমধ্যে এমন ইতিবাচক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। এরই মধ্যে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকাররত জেলেরা অনেকেই তীরে ফিরে এসেছে। বাকিরা মধ্যরাতের আগেই পটুয়াখালীর মৎস্য বন্দর আলিপুর মহিপুর, কুয়াকাটা সহ বিভিন্ন নদনদীতে এসে লঙ্গর করে নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরতে শুরু করেছে।
প্রায় এক দশক ধরে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের বংশবিস্তার, বৃদ্ধি ও টেকসই আহরণের লক্ষ্যে প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছিল মৎস্য অধিদপ্তর। তবে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে সময়সীমার সামঞ্জস্যতা না থাকায় বরাবরই এ নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে আসছিল জেলেরা। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবার প্রথমবারের মতো সময়সীমা পুনর্বিন্যাস করে ৫৮ দিন নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, যা ভারতের নিষেধাজ্ঞার সময়সীমার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
নিষেধাজ্ঞার সময় সামুদ্রিক মাছ শিকার, পরিবহন, সংরক্ষণ এবং বিপণন পুরোপুরি নিষিদ্ধ থাকবে। তবে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে জেলেদের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে দিতে সরকারিভাবে চাল সহায়তা কর্মসূচি চালু থাকবে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর।
নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা কমিয়ে এবং প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে মিল রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন জেলেসহ সংশ্লিষ্ট সকলে। এতে যেমন সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে, তেমনি জেলেদের জীবিকা ও আয়ও তুলনামূলকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে আশা করা হচ্ছে। এদিকে নিষেধাজ্ঞা পালনের লক্ষ্যে কুয়াকাটার সবচেয়ে বড় দু’টি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আলীপুর-মহিপুরের শত শত জেলে ট্রলার ইতোমধ্যে ঘাটে নোঙর করেছে।
মহিপুরের জেলে আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ভারতের সাথে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া। এ বছর সরকার সে দাবি পূরণ করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তবে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে সরকারি প্রণোদনা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।’
কুয়াকাটার জেলে মোঃ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মাছ ধরায় ভারতের সাথে নিষেধাজ্ঞার মিল না থাকায় ভারতীয় জেলেরা আমাদের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে যেত। এ বছর তাদের সাথে মিল থাকায় এটা পারবে না বলে আশা করছি।’
মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার মালিক সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) রাজু আহমেদ রাজা মিয়া বলেন, ‘আমাদের জেলেরা সবসময় সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা শতভাগ পালন করেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবে না। ইতোমধ্যে নিষেধাজ্ঞা সফল করতে জেলেরা ঘাটে আসতে শুরু করেছে।’
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য অধিদফতরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক প্রদীপ কুমার সরকার বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে প্রত্যেক জেলেকে ৭৭ কেজি করে চাল প্রদান করা হবে। এছাড়া অবরোধ শতভাগ সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ জেলায় নিবন্ধিত ৮১ হাজার জেলে থাকলেও এরমধ্যে সমুদ্রগামী জেলের সংখ্যা ৪৭ হাজার বলে জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা। ###
সম্পাদক ও প্রকাশক : আল মামুন, নির্বাহী সম্পাদক : ফোরকানুল হক (সাকিব), ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : সোহাগ আরেফীন,
প্রধান কার্যালয় : ৯২, আরামবাগ ক্লাব মার্কেট, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত