ময়মনসিংহের নিষিদ্ধ পল্লীতে কুখ্যাত সরদারনি লাভলীর হাতে বিক্রি হওয়া এক তরুণীকে উদ্ধারকরতে মাঠে নামে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ। রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানার বউবাজার এলাকার মোছাঃ উম্মে আক্তার ছালমা (১৮) নামের ওই তরুণীকে চাকরির লোভ দেখিয়ে অপহরণ করে কৌশলে সরদারনি লাভলীর নরকযন্ত্রে ঠেলে দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, লাভলী ও তার দালাল চক্র দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সহজ-সরল মেয়েদের ফাঁদে ফেলে নিষিদ্ধ পল্লীতে বিক্রি করে দেয়।
লাভলীর হাতে বিক্রির ভয়ংকর কাহিনি জানিয়েছে ভুক্তভোগী ছালমা, তার ভাস্যমতে কয়েকদিন আগে এক দালাল চাকরির লোভ দেখিয়ে ছালমাকে বাড়ি থেকে বের করে আনে। এরপর তাকে টাকার বিনিময়ে লাভলীর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। লাভলী ও তার সহযোগীরা তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করে।
ছালমা যখন ময়মনসিংহের নিষিদ্ধ পল্লীতে লাভলীর কব্জায় বন্দি। বিষয়টি মানবাধিকার কর্মী সাদিকুর রহমান সাদেক ও সাংবাদিক মোঃ বিল্লাল হোসেন মানিকের মাধ্যমে পুলিশের নজরে আনলে তাৎক্ষণিকভাবে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম অভিযান পরিচালনা করে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন।
অভিযানের কথা জানতেপেরে লাভলী কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
পুলিশের আকস্মিক অভিযানে লাভলী ও তার সহযোগীরা টের পেয়ে গা ঢাকা দেয়। তবে তরুণীকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। মানবাধিকার কর্মী ও স্থানীয়রা লাভলীকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য সর্বোচ্চ প্রশাসনিক চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়েছেন।
উদ্ধারের পর ছালমার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং তারা জানিয়েছেন, তাদের মেয়েকে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরদারনি লাভলী ও তার চক্রের বিরুদ্ধে মানব পাচার ও যৌন নিপীড়নের মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান।
এই ঘটনায় স্থানীয় জনতা, মানবাধিকার সংগঠন ও সাংবাদিকরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, লাভলীর মতো নরপিশাচদের কারণে নিষিদ্ধ পল্লীগুলো পরিণত হয়েছে মানব পাচারের কারখানায়। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, লাভলীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক এবং নিষিদ্ধ পল্লীতে আর কোনো নারী যেন জোরপূর্বক আটকে না থাকে তা নিশ্চিত করা হোক।
এ ঘটনায় সারাদেশে মানব পাচার ও দেহ ব্যবসার ভয়ংকর বাস্তবতা আরও একবার প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, লাভলীর মতো অনেক সরদারনি ও তাদের দালাল চক্র নারীদের প্রতারণার মাধ্যমে নিয়ে এসে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করছে।
মানবাধিকার কর্মী ও সচেতন মহল জোর দাবি জানিয়ে বলেছেন, শুধু উদ্ধার অভিযান চালালেই হবে না, এই চক্রের মূল হোতাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নিলে লাভলীর মতো অপরাধীরা আরও ভয়ংকর হয়ে উঠবে এবং শত শত মেয়ের জীবন ধ্বংস হবে।